প্রতিদিন কতটুকু লবণ খাওয়া উচিৎ
আমরা প্রায়ই রোগীদের বলে থাকি বাড়তি লবণ খাবেন না। কাথাটার অর্থ আসলে কী? লবণ আর সোডিয়াম এক কথা নয়। রান্নায় ব্যবহৃত লবণ হলো সোডিয়াম ক্লোরাইড। লবণের ৪০ শতাংশ জুড়ে থাকে সোডিয়াম। তাই এক চামচ লবণ মানেই কিন্তু এক চামচ সোডিয়াম নয়। আমাদের কম খেতে হবে সোডিয়াম।
বিশেষ করে, যাদের উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, কিডনি ও যকৃতের সমস্যা ইত্যাদি আছে। বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ গ্রুপ যে নির্দেশনা দিয়েছে, তাতে দৈনিক ১৫০০ থেকে ২৩০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম খাওয়া যাবে। মানে ১৫০০ মিলিগ্রামের কম হলে তো খুবই ভালো, তবে ২৩০০ মিলিগ্রামের ওপরে কখনই নয়। তো ১৫০০ মিলিগ্রামে সোডিয়াম আছে ৩ দশমিক ৭৫ গ্রাম পরিমাণ লবণ, মানে পৌনে এক চামচ লবণে। ২৩০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম খেতে হলে ৬ গ্রাম পরিমাণ লবণ খেতে হবে, অর্থাৎ এক চামচ। তার মানে দাঁড়াল, সারা দিনে এক চামচ পরিমাণের বেশি লবণ খাওয়া যাবে না।
গড়পড়তা আমরা দৈনিক ৩০০০ থেকে ৩৫০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম খেয়ে ফেলি। এর একটা বড় অংশ আসে প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে। কেননা খাবার সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সময় এতে প্রচুর লবণ যোগ করা হয়। এছাড়া লবণ মূলত যোগ করা হয় খাবারে স্বাদ বাড়াতে। আর কেউ কেউ তো পাতে- এরপরও আলাদা লবণ নিয়ে খান।
বেকিং সোডা ব্যবহৃত হয় এমন খাবার (যেমন- পাউরুটি বা ব্রেড, বেকারির বিভিন্ন খাবার), বিস্কুট, প্রক্রিয়াজাত মাংস (যেমন- সসেজ, নাগেট), যেকোনো টিনের বা সংরক্ষিত খাবার (যেমন- আচার, পনির), সস বা সয়াসসে ভেজানো খাবার যা পরে পরিবেশন করা হয় (যেমন- চিকেন ফ্রাই ও অন্যান্য ফাস্টফুড), ইনস্ট্যান্ট নুডলস ও পাস্তা, লবণ মাখানো চানাচুর, বাদাম ইত্যাদি বাড়তি লবণের বড় উৎস।
দেখা যায়, আমরা রান্নায় লবণ কমিয়েছি ঠিকই, কিন্তু কেনা খাবারে অনেক লবণ রয়ে গেছে, সেটা খেয়াল করছি না। কখনো আমরা নিজের অজান্তেই খাবারে লবণ যোগ করে ফেলি অভ্যাসবশত। যেমন সালাদ তৈরির সময় বা কাঁচা ফল খাওয়ার সময়। ওটা হিসাবের মধ্যেই ধরি না। আসলে এতখানি মেপে তো আর প্রতিদিন রান্না করা যাবে না। তাই চিকিৎসক যদি লবণ কম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন, তবে তিনটি কাজ করবেন- এক. আলগা লবণ একেবারেই খাবেন না, দুই. রান্নায় আগের চেয়ে একটু কম লবণ দিন আর তিন. ওপরে উল্লেখিত অতি লবণাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
লেখক: অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল, ঢাকা
প্রতিদিন কতটুকু লবণ খাওয়া উচিৎ
ডা. খাজা নাজিম উদ্দীন
০৮ নভেম্বর ২০২২, ২২:১১:৩২ | অনলাইন সংস্করণ
আমরা প্রায়ই রোগীদের বলে থাকি বাড়তি লবণ খাবেন না। কাথাটার অর্থ আসলে কী? লবণ আর সোডিয়াম এক কথা নয়। রান্নায় ব্যবহৃত লবণ হলো সোডিয়াম ক্লোরাইড। লবণের ৪০ শতাংশ জুড়ে থাকে সোডিয়াম। তাই এক চামচ লবণ মানেই কিন্তু এক চামচ সোডিয়াম নয়। আমাদের কম খেতে হবে সোডিয়াম।
বিশেষ করে, যাদের উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, কিডনি ও যকৃতের সমস্যা ইত্যাদি আছে। বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ গ্রুপ যে নির্দেশনা দিয়েছে, তাতে দৈনিক ১৫০০ থেকে ২৩০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম খাওয়া যাবে। মানে ১৫০০ মিলিগ্রামের কম হলে তো খুবই ভালো, তবে ২৩০০ মিলিগ্রামের ওপরে কখনই নয়। তো ১৫০০ মিলিগ্রামে সোডিয়াম আছে ৩ দশমিক ৭৫ গ্রাম পরিমাণ লবণ, মানে পৌনে এক চামচ লবণে। ২৩০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম খেতে হলে ৬ গ্রাম পরিমাণ লবণ খেতে হবে, অর্থাৎ এক চামচ। তার মানে দাঁড়াল, সারা দিনে এক চামচ পরিমাণের বেশি লবণ খাওয়া যাবে না।
গড়পড়তা আমরা দৈনিক ৩০০০ থেকে ৩৫০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম খেয়ে ফেলি। এর একটা বড় অংশ আসে প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে। কেননা খাবার সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সময় এতে প্রচুর লবণ যোগ করা হয়। এছাড়া লবণ মূলত যোগ করা হয় খাবারে স্বাদ বাড়াতে। আর কেউ কেউ তো পাতে- এরপরও আলাদা লবণ নিয়ে খান।
বেকিং সোডা ব্যবহৃত হয় এমন খাবার (যেমন- পাউরুটি বা ব্রেড, বেকারির বিভিন্ন খাবার), বিস্কুট, প্রক্রিয়াজাত মাংস (যেমন- সসেজ, নাগেট), যেকোনো টিনের বা সংরক্ষিত খাবার (যেমন- আচার, পনির), সস বা সয়াসসে ভেজানো খাবার যা পরে পরিবেশন করা হয় (যেমন- চিকেন ফ্রাই ও অন্যান্য ফাস্টফুড), ইনস্ট্যান্ট নুডলস ও পাস্তা, লবণ মাখানো চানাচুর, বাদাম ইত্যাদি বাড়তি লবণের বড় উৎস।
দেখা যায়, আমরা রান্নায় লবণ কমিয়েছি ঠিকই, কিন্তু কেনা খাবারে অনেক লবণ রয়ে গেছে, সেটা খেয়াল করছি না। কখনো আমরা নিজের অজান্তেই খাবারে লবণ যোগ করে ফেলি অভ্যাসবশত। যেমন সালাদ তৈরির সময় বা কাঁচা ফল খাওয়ার সময়। ওটা হিসাবের মধ্যেই ধরি না। আসলে এতখানি মেপে তো আর প্রতিদিন রান্না করা যাবে না। তাই চিকিৎসক যদি লবণ কম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন, তবে তিনটি কাজ করবেন- এক. আলগা লবণ একেবারেই খাবেন না, দুই. রান্নায় আগের চেয়ে একটু কম লবণ দিন আর তিন. ওপরে উল্লেখিত অতি লবণাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
লেখক: অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল, ঢাকা
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2024