তোকায়েভের ভূমিধস জয়ে চীনের দিকে ঝুঁকবে কাজাখস্তান

 যুগান্তর ডেস্ক 
২৪ নভেম্বর ২০২২, ০৪:০৫ পিএম  |  অনলাইন সংস্করণ

কাজাখস্তানের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ত তোকায়েভের ভূমিধস জয়ের পর দেশটি চীন ও পশ্চিমা শক্তির সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে মনোনিবেশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে মধ্য এশিয়ার সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্রগুলোর ওপর মস্কোর প্রভাব কমে যাওয়ায় এমনটি মনে করা হচ্ছে। 

রোববার দেশটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরে সোমবার নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত প্রাথমিক ফল অনুসারে তোকায়েভ অন্য পাঁচ প্রার্থীকে পরাজিত করেছেন। তিনি নির্বাচনে ৮১.৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। ২০২৯ সাল পর্যন্ত তিনি এখন ক্ষমতায় থাকবেন।

তোকায়েভের অব্যাহত নেতৃত্বে কাজাখস্তানে রাশিয়ার প্রভাব হ্রাস পায়। একই সঙ্গে চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গে তাদের শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। 

এদিকে নির্বাচনে জয়ের পর সোমবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং তোকায়েভকে একটি অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন।  তাদের সঙ্গে চার দশক ধরে চলমান সম্পর্ক আরও উন্নতির ইঙ্গিত দিয়েছেন শি।

জনমত জরিপে তোকায়েভের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য ক্রমবর্ধমান সমর্থন দেখানো হয়েছে। নির্বাচনি গণসংযোগে তোকায়েভ অতীতের ভুলগুলো সংশোধন এবং জমে থাকা সমস্যাগুলো সমাধান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এ সময় তিনি তার পূর্বসূরি সাবেক প্রেসিডেন্ট নুর সুলতান নাজারবায়েভের কঠোর সমালোচনা করেন, যিনি ১৯৯১ সালে কাজাখস্তান স্বাধীনতা লাভের পর প্রায় তিন দশক ধরে ক্ষমতায় ছিলেন এবং তাকে দেশের জনক হিসেবে বিবেচনা করা হয়৷

সর্বশেষ নির্বাচন কাজাখস্তানের জন্য আন্তর্জাতিক এবং ঘরোয়া মঞ্চ উভয় ক্ষেত্রেই তোকায়েভের চলার পথকে শক্তিশালী করবে।

গত জানুয়ারি মাসে কাজাখস্তানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হলে তোকায়েভ সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্রগুলোর মস্কো-নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের কাছে সমর্থনের অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর তিনি নিজেকে সেখান থেকে দূরে সরিয়ে নিতে শুরু করেন।

মধ্য এশিয়ার অন্য দেশগুলোও একইভাবে মস্কো থেকে দূরে সরে গেছে। ১৪ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ইউক্রেনকে ক্ষতিপূরণ দিতে রাশিয়াকে আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। রাশিয়া ও চীন এর বিপক্ষে ভোট দিলেও কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান এবং তাদের বেশ কিছু প্রতিবেশী দেশ ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে।

চীন মধ্য এশিয়ায় বিশেষভাবে তার প্রভাব বিস্তার করতে চায়। কাজাখস্তান হলো বেইজিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ উদ্যোগের মূল অংশ, সেই সঙ্গে তেল এবং অন্যান্য পণ্যের একটি মূল উৎস।

আর এ কারণে শি জিনপিং গত সেপ্টেম্বরে কাজাখস্তানে তোকায়েভের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় শি সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার বৈঠকের জন্য উজবেকিস্তানও সফর করেছিলেন।

তবে তোকায়েভ দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর কাজাখস্তানের গণতান্ত্রিক সংস্কারের কতটা উন্নতি ঘটে তা দেখার অপেক্ষায় থাকবে বিশ্ববাসী। এ ছাড়া চীনের সঙ্গে তার সম্পর্ক কতদূর গড়ায় সেটিও দেখার বিষয়।

তথ্যসূত্র: নিকেই এশিয়া

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন