‘ইসলামি দলগুলোকে জনগণের সুখ-দুঃখে পাশে থাকতে হবে’

 তানজিল আমির 
২৮ এপ্রিল ২০২২, ০৪:০৫ পিএম  |  অনলাইন সংস্করণ

সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানি। সাজ্জাদানশিন ও মোন্তাজেম, দরবারে গাউছুল আযম মাইজভাণ্ডারি, মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফ, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম। এ ছাড়া পার্লামেন্ট অব ওয়ার্ল্ড সুফিজ প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান তিনি। 

শতাব্দীর ঐতিহ্যবাহী মাইজভাণ্ডার দরবারের এ গদিনশিন সামাজিক ও জনবান্ধব কাজে বেশ জনপ্রিয়। পীর-মুরিদির প্রচলিত ধারার বাইরে গিয়ে কিছুটা নতুনত্ব লক্ষ্য করা যায় তার কর্মকাণ্ডে। জনসাধারণের অধিকার নিয়ে কথা ও কাজ করছেন দেশজুড়েই। প্রতিষ্ঠা করেছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি নামে একটি রাজনৈতিক দল। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করছেন দীর্ঘদিন। পেয়েছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা। 

মাইজভাণ্ডার দরবারের ইতিহাস ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে যুগান্তরের পক্ষ থেকে তার মুখোমুখি হয়েছেন- তানজিল আমির

প্রশ্ন: মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফের প্রতিষ্ঠা, উদ্দেশ্য ও ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চাই। মাইজভাণ্ডার দরবারের যাত্রা শুরু হলো কীভাবে? 

সাইফুদ্দীন আহমেদ আল হাসানি: আমি মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফের একজন আওলাদ ও বর্তমানে দরবারের প্রতিনিধিত্ব করছি। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানায় একটি আধ্যাত্মিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার নাম মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফ। 

মূলত মাইজভাণ্ডার একটি প্রাচীন গ্রামের নাম। মাইজভাণ্ডার গ্রামে মগ, চাকমারা নিজেদের ধনভাণ্ডার, খাদ্যশস্য ও রসদের একটি ভাণ্ডার তৈরি করে এবং সেখানে তারা তা জমিয়ে রাখত অনেক প্রাচীনকাল থেকেই। তো সেখান থেকেই মাইজভাণ্ডার নামকরণ। এ এলাকায় কয়েকজন আল্লাহর ওলির আগমন ঘটে। যাদের পূর্বপুরুষ বাগদাদ থেকে এসেছেন। 

১৫৭১ সালে আব্দুল কাদের জিলানির বংশধর সৈয়দ হামিদুদ্দিন আল কাদেরি গৌরী তিনি সে সময় বাগদাদে বিচারক ছিলেন। বাংলাদেশের তখনকার সুলতান তাকে গৌরে নিয়ে আসেন বিচারের কাজ করার জন্য। সে থেকেই তারা এ দেশেই রয়ে গেছেন। এর পর তিনি চট্টগ্রামে চলে যান। আমাদের পূর্বপুরুষরা চট্টগ্রামে ইসলামের অনেক খেদমত করেছেন। এই ধারাবাহিকতায় মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফে আমাদের পূর্বপুরুষরা অবস্থান করেন। 

সৈয়দ আহমাদুল্লাহ মাইজভাণ্ডারি কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে শিক্ষা সমাপন করে সে সময় ওকালতির পড়াশোনা করে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তিনি চট্টগ্রামের বিভিন্ন মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ও মুহাদ্দিস হিসাবে আত্মনিয়োগ করেন এবং যশোরে তাকে সরকার কর্তৃক বিচারবিভাগীয় কাজে নিযুক্ত করা হয়। অতঃপর তিনি সেখানে পাঁচ বছর সম্মানের সঙ্গে নিজের দায়িত্ব পালন করে আবারও চট্টগ্রামে ফিরে আসেন ও আধ্যাত্মিকতার এক নতুন ধারার সূচনা করেন।

প্রশ্ন: মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফের মাধ্যমে ২০০ বছরের মতো এ দেশে ইসলামের কাজ চলছে, তো এই দীর্ঘ সময়ে মাইজভাণ্ডার দরবারের উল্লেখযোগ্য অবদান কী কী? 

সাইফুদ্দীন আহমেদ আল হাসানি: সৈয়দ আহমাদুল্লাহ মাইজভাণ্ডারি চট্টগ্রামের মানুষের মাঝে ইসলামের বাণী পৌঁছাতে শুরু করেন। বাংলার মাটিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও আইন প্রয়োগের সুষম বণ্টনে তার অনেক অবদান রয়েছে। তখন থেকেই এই জায়গাটি একটি আধ্যাত্মিক জায়গা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সব ধর্মের মানুষ এখানে আসত। নিজেদের আত্মার শান্তি ও তৃপ্ত হৃদয় নিয়েই তারা আসা যাওয়া করত। 

আল্লাহ বলেছেন, যারা আল্লাহর অনুগ্রহশীল বান্দা তাদের কাছেই আল্লাহর রহমত রয়েছে। আউলিয়া কেরামের দরবারই হচ্ছে আল্লাহর কাছে আসার উৎস। এই দরবারে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ এসে নিজেদের আত্মার প্রশান্তি পেত। পাশাপাশি তারা ইসলামের আলো ও কালেমার দাওয়াতে আলোকিত হয়েছেন। 

মূল কথা হচ্ছে খারাপ মানুষদের ভালো করাই আল্লাহ ওয়ালাদের কাজ। সেই চর্চাই মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফে অব্যাহত রয়েছে। আমার পিতা সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ এ দরবারের কার্যক্রমকে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও চালু করেছেন।  জাতিসংঘ থেকে ইউনেস্কোসহ আন্তর্জাতিকভাবে যেসব সংস্থা আছে সেখানে দেশ ও ইসলামের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তিনি সেখানে ইসলামের পক্ষে ও মদিনার সনদের আলোকে কথা বলেছেন। 

২০০০ সালে ওয়ার্ল্ড রিলিজিয়াস পিস পোগ্রাম যা জাতিসংঘের সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেখানে তিনি গিয়েছেন। সর্বদা তিনি ইসলামের পক্ষে ও মানবতার পক্ষে কাজ করে গেছেন। আমিও সেই পথে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।  আমরা চেষ্টা করি মানুষকে আলোকিত করার। কারণ একজনকে আলোকিত করলে তার মাধ্যমে ১০০ মানুষ আলোকিত হবে। এ ১০০ মানুষের সঙ্গে যারা সম্পর্ক রাখবে তারাও আলোকিত হবে। এভাবে হাজার হাজার মানুষ আলোকিত হবে। 

সুফিবাদের মাধ্যমে ইসলামকে ছড়িয়ে দেওয়াই মাইজভাণ্ডার শরিফের মূল উদ্দেশ্য। সুফিজমই হচ্ছে আসল ইসলাম যারা মানুষের ক্ষতি করে না। সবসময়ই কল্যাণ চিন্তা করে। কারণ ইসলাম হচ্ছে শান্তি, কল্যাণ ও সম্প্রীতির ধর্ম। সে ধারাতেই মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফে যুগ যুগ ধরে পরিচালিত হচ্ছে। 

এ দরবার সবসময়ই মজলুমের পক্ষে ছিল। ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত এ বাংলার মানুষের পাশেই ছিল মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফ। বাংলার মানুষের গ্রহণযোগ্যতাকে গুরুত্ব দিয়ে দরবারের অনুষ্ঠানের যে সূচি আছে তা বাংলা তারিখ প্রাধান্য দিয়ে বানান হয়েছে। এর মাধ্যমেই বাংলাভাষার স্বীকৃতিকে আরও প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।

প্রশ্ন: প্রায় ১১টি ইসলামিক দল ও আপনাদের তরিকতের দুটি দল থাকা সত্ত্বেও আপনি সম্প্রতি একটি দল গঠন করেছেন, এই দল নিয়ে আপনার ভাবনা কী? 

সাইফুদ্দীন আহমেদ আল হাসানি: আসলে ইসলামকে ব্যবহার করে কোনো দল গঠন বা রাজনীতি করা আমার উদ্দেশ্য নয়। দেশের জন্য কিছু করা ও জনগণের জন্য কিছু করাই মূল উদ্দেশ্য। পাশাপাশি ধর্ম ও মানবতার জন্য এটি করা। আমি বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি গঠন করেছি এবং এটি নিয়ে কাজ করেছি। দেশের মানুষের চাওয়া পাওয়া, মানুষের ভালোমন্দ ও জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকাই হচ্ছে সুপ্রিম পার্টির মূল লক্ষ্য। আমরা ইনশাআল্লাহ এ দল নিয়েই সামনে এগিয়ে যাব। 

আমরা চাই নতুন প্রজন্ম, যুবসমাজকে আমাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে। সৌহার্দ্যপূর্ণ একটি পরিবেশ সৃষ্টি করতে। সব দলের সঙ্গেই একটি সুন্দর পরিবেশ ও দেশের মধ্যে ঐক্য সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত করাই আমাদের লক্ষ্য। 

প্রশ্ন: সম্প্রতি আপনার একটি মন্তব্য বেশ আলোচিত হয়েছে, ইসলামিক দলগুলো জনগণের কাছে যেতে পারেনি, অনেকটা অনুষ্ঠানকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে। এর ব্যাখ্যা কী? 

সাইফুদ্দীন আহমেদ আল হাসানি: অনুষ্ঠানকেন্দ্রিক মানে অনুসারী ভিত্তিক। জনগণের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আপনি জনগণের কথা যতক্ষণ পর্যন্ত বলতে পারবেন না, সাধারণ জনগণের দুঃখ দুর্দশার সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারবেন না, ততদিন পর্যন্ত আপনি যে রাজনৈতিক দলই করেন কোনো লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন না। আমি সেটিই বুঝিয়েছি যে আমাদেরকে নিজেদের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অনুসারী ভিত্তিক পরিবেশের বাহিরে এসে আমাদের কাজ করতে হবে। যদি রাজনীতি করতে চান তাহলে রাজনীতির মতোই করতে হবে। যাদের জন্য বলবেন তাদের জন্যই এ কাজ করতে হবে। আমরা রাজনীতি জনগণের জন্য করি। তা যেন জনগণের জন্যই হয়। তাই নিজেদের গণ্ডি পেরিয়ে আমাদেরকে সবার সামনে আসতে হবে। 

প্রশ্ন: আপনার কথায় জনগণের বিষয়টি বেশি উঠে আসছে। আর আপনি মনে করছেন যে ইসলামি দলগুলো জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারেনি। তো তারা কেন পারেনি এবং কী কৌশলে এগুলে এটি সম্ভব হবে বলে মনে করেন? 

সাইফুদ্দীন আহমেদ আল হাসানি: মূলত জনগণের দাবিদাওয়া, মূল্য বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কিন্তু ইসলামি রাজনৈতিক দলগুলো কথা বলা তো দূরের কথা তারা এগুলা নিয়ে চিন্তাই করে না। পাশাপাশি দেশের বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলোও এসব বিষয় নিয়ে নিশ্চুপ। 

আমরা দেখেছি কিছুদিন আগে তাজিকিস্তানে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি হওয়াতে সেখানে কি ভয়াবহ বিক্ষোভ হয়েছে। সেখানের মানুষ এত সচেতন যে সরকারও পালটে ফেলেছে আন্দোলন করে। এজন্য আমাদেরকে মানুষের কথা ও মূল্য বৃদ্ধির কারণে জনগণের পারিবারিক দুরবস্থা, অর্থনৈতিক সমস্যা হচ্ছে তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কথা বলা উচিত। 

আমি অব দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল বলব অথচ তাদের কোনো কথাই যদি আমি না বলি বা তাদের কষ্ট অনুধাবন না করি তাহলে রাজনীতির নাম ব্যবহার করাটা যুক্তিযুক্ত হবে না।

প্রশ্ন : বাংলাদেশে পির-মুরিদিকেন্দ্রিক যেসব রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে তাদেরকে মুরিদরা পির হিসাবে যতটা গ্রহণ করে নেতা হিসাবে ততটা নয়, ভোটের ক্ষেত্রেও সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। আপনিও কি তাই মনে করেন? 

সাইফুদ্দীন আহমেদ আল হাসানি: বিএনপিসহ কয়েকটি দল নির্বাচন বর্জন করার কারণে ভোটের আসল চিত্রটি এখন সেভাবে ফুটে ওঠে না। কিন্তু সব দল যখন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তখন আসলে ভোটের চিত্র অন্যরকম হবে। সে হিসাবে ইসলামিক রাজনৈতিক দলগুলো কিন্তু সেই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে সক্ষম হয়নি। 

এর কারণ একটিই, জনগণের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার অভাব। ওয়াজ নসিহত ভিত্তিক বা পিরমুরিদি ভিত্তিক, মাদ্রাসাকেন্দ্রিক যেসব কার্যক্রম তারা ধরে রেখেছে সে হিসাবে জনগণের সুখ-দুঃখে তাদেরকে খুব একটা বেশি দেখা যায়নি। আমরা বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির পক্ষ থেকে সেই পরিবর্তন আনতে চাচ্ছি। 

আমরা চাই সবাই যেন এভাবেই নিজেদেরকে পরিবর্তন করে মানুষের জন্য কাজ করতে পারি, আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হবে মানুষের সেবা। রাজনীতি করলে যেন মানুষের জন্য করা হয় নিজের জন্য না করা হয়। 

প্রশ্ন: সম্প্রতি মার্কিন প্রশাসন র্যা বের কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, বিষয়টি একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসাবে আপনি কিভাবে দেখেন? 

সাইফুদ্দীন আহমেদ আল হাসানি: দেখুন, এ দেশে উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ দমনে র্যা বের অনেক ভূমিকা আছে তা অনস্বীকার্য। দোষ-গুণ সবারই আছে। ভালোমন্দ মিলিয়েই সবকিছু। দেশে এখন যে সার্বিক উন্নতি হচ্ছে অনেকের কাছেই এগুলো চক্ষুশূল। অনেক দেশ তা মানতে পারছে না। অনেক দেশ তাদের প্রবৃদ্ধিও ধরে রাখতে পারছে না করোনার জন্য। অনেকের অর্থনৈতিক ধস পড়েছে। সেখানে বাংলাদেশের এমন উন্নতি বা মানুষের যেই অর্থনৈতিক সচ্ছলতা তা অনেকের কাছে হিংসার কারণ হয়েছে। যেমন শ্রীলঙ্কায় একটি বিরাট অর্থনৈতিক ধস চলছে। সে তুলনায় বাংলাদেশে উপর আল্লাহর রহমত আছে। এ দেশের মাটিতে অনেক আউলিয়া কেরাম শায়িত আছেন। 

উলামায়ে কেরাম অনেকেই দুনিয়াতে না থাকলেও তাদের দোয়া কিন্তু আছে আমাদের উপর। পাশাপাশি খুব অল্প সময় আউলিয়া কেরামের দোয়ার ফসলে এ দেশ মাত্র নয় মাসে স্বাধীন হয়েছে। পাকিস্তানের এক লাখ সৈন্য থাকা সত্ত্বেও আমাদের সঙ্গে তারা পারেনি। অথচ সেই সৈন্য দিয়ে দশ বছর যুদ্ধ করা যায়। কিন্তু আল্লাহর মেহেরবানিতে আমরা বিজয় লাভ করেছি। তো এগুলো আমাদের বুঝতে হবে। আধ্যাত্মিক বিষয় আসলে এগুলো। এসব নিষেধাজ্ঞা দিলেও আল্লাহ যদি আমাদের উপর মেহেরবানি করেন তাহলে কোনো নিষেধাজ্ঞাই আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না। 

তবে আমাদের দেশের বিশ্বাসঘাতক শ্রেণির কিছু মানুষের কারণে ভুল তথ্য যাচ্ছে বিদেশে। যা সামগ্রিকভাবে কিন্তু দেশেরই ক্ষতি। এগুলো করে দেশের কল্যাণ হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিজেদের কাজ করছে। কারও বিষয় নিয়েই কারও মাথা ঘামানো উচিত না। আমেরিকা এখন মানবতার কথা বলছে অথচ তাদের বিষয়গুলো যদি আমরা তুলে ধরি যে সিরিয়া ইরাকে তারা কি করেছে? পারমাণবিক বোমার মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে পুরো ইরাক তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। 

লিবিয়াকে কিভাবে তারা ধ্বংস করেছে। এই যে তারা অমানবিক নির্যাতনের মাধ্যমে সেখানকার লাখ লাখ মানুষকে তারা শরণার্থী বানিয়ে দিয়েছে। মানবেতর জীবন যাপন করছে সেখানকার অসহায় মানুষগুলো। তো আমেরিকা এখন কিভাবে মানবিকতার ঢোল পিটায়। আরেকজনকে হেদায়াত দেয়ার আগে দেখতে হবে আমি হেদায়াতের উপর আছি কিনা। এখন তাদের মধ্যেই আমরা কোনো হিউম্যান রাইটসের লেশও দেখি না। অথচ তারা এখন আমাদের দেশের মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন করে। একটা দেশের মধ্যে অনেক কিছুই হয়। আমরা তো তাদের মতো অন্য দেশ ধ্বংস করিনি। 

আজ আমেরিকা লিবিয়া, ইরাক, আফগানিস্তানকে তারা নরক বানিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে। তাদের চক্রান্তেই আজ লাখ লাখ মানুষ শরণার্থী জীবন পার করছে। এরা সবাই মুসলমান। মুসলিম দেশগুলোকে এরা ধ্বংস করতে উঠে পড়ে লেগেছে। তো বাংলাদেশ ৩য় মুসলিম প্রধান দেশ, বিশ্বে তো আমাদের ইমান মজবুত আছে। 

ইনশাআল্লাহ আগামী ৫/১০ বছরের মধ্যে আমাদের যেই অর্থনৈতিক রোডম্যাপ আছে সে হিসাবে এগিয়ে চললে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। বাংলাদেশকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না।

অনুলিখন করেছেন- কাজী আব্দুল্লাহ
  

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন