‘জাতীয় বাজেটেও আওতাভুক্তকরণের জন্য পরিপত্র জারি প্রয়োজন’

 যুগান্তর প্রতিবেদন 
২৯ জুলাই ২০২২, ০৭:২৩ পিএম  |  অনলাইন সংস্করণ

নারী, শান্তি ও নিরাপত্তাবিষয়ক জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (২০১৯-২০২২)-এর সময়সীমা বাড়ানো,
অতিসত্ত্বর পরিপত্র জারি করা, বার্ষিক পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্তি বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের (বিএনপিএস) উদ্যোগে ও ইউএনওমেন-এর সহযোগিতায় রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে নারী, শান্তি ও নিরাপত্তাবিষয়ক জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (২০১৯-২০২২)-এর বাস্তবায়নবিষয়ক জাতীয় সংলাপে বক্তারা এ কথা বলেন। 
বিএনপিএস-এর নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীরের সভা নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপ অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন ইউএনওমেন-এর ডেপুটি ক্লান্ট্রি রিপ্রেজেন্টটেটিভ দিওয়া নন্দা, বাংলাদেশের অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার নার্দিয়া সিম্পসন। বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন। ওই সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুননেছা ইন্দিরা, এমপি। সংলাপের মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ইউএনওমেন-এর প্ল্যানিং, মনিটরিং অ্যান্ড রিপোর্টিং অ্যানালিস্ট তানিয়া শারমীন। প্যানেল আলোচক হিসাবে বক্তব্য দেন রিব-এর নির্বাহী পরিচালক ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, জেন্ডার বিশেষজ্ঞ শিপা হাফিজা ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম। সংলাপে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগের স্পেশাল ব্রাঞ্চ-এর উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আমেনা বেগম, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রাইসা ইসলাম প্রমুখ। সংলাপে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (ইউএন) তৌফিক ইসলাম সাতিল।
সভাপ্রধানের বক্তব্যে রোকেয়া কবীর বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে কোনো যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নাই। কিন্তু এই স্বাধীন বাংলাদেশে দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীসমাজ বৈষম্য ও সহিংসতার শিকার। এ বৈষম্য, সহিংসতা ও দ্বন্দ্বময় পরিস্থিতির মূলে রয়েছে পুরুষতান্ত্রিক আধিপত্যবাদ, জনমনে গণতন্ত্র সম্পর্কে একপেশে ধারণা ও চর্চা এবং নারীবিদ্বেষী প্রচার-প্রচারণা-যা সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। নারী, শান্তি ও নিরাপত্তাবিষয়ক জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (২০১৯-২০২২)-বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় এসব মূল কারণগুলিতেই কাজ করা প্রয়োজন। অ্যাকশন প্ল্যানের কর্মসূচিগুলো মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক কর্মপরিকল্পনার আওতাভুক্তকরণ এবং সে অনুযায়ী জাতীয় বাজেটেও আওতাভুক্তকরণের জন্য অতিসত্ত্বর পরিপত্র জারি করা প্রয়োজন।
ইউএনওমেন-এর প্ল্যানিং, মনিটরিং অ্যান্ড রিপোর্টিং আনালিস্ট তানিয়া শারমীন তার প্রবন্ধে ‘ন্যাশন্যাল প্ল্যান উইমেন পিস অ্যান্ড সিকিউরিটির’ বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন।
সিভিল সোসাইটি সংস্থা ও বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে উইমেন পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে কথা বলেন তিনি।
ইউএনওমেন-এর ডেপুটি ক্লান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ দিয়া নন্দা বলেন, আজকের আলোচনায় ইউএনএসসিআর ১৩২৫ এজেন্ডা বাস্তবায়নে সিভিল সোসাইটি সমাজের সম্পৃক্ততার গুরুত্ব লক্ষণীয়। আমরা আশা করি যে, এ আলোচনা, এনএপি ডব্লিউপিএস-এ বর্ণিত সিভিল সোসাইটি সংস্থাদের জন্য পরামর্শমূলক এ প্ল্যাটফরমকে আনুষ্ঠানিক করার প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্ব দেবে।
অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনার নার্দিয়া সিম্পসন বলেন, ইউএন পিস কিপিং মিশনে বাংলাদেশ রোল মডেল। ইউএন পিস কিপিং মিশনে বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার পিস কিপিংয়ের দায়িত্ব পালন করছেন যার মধ্যে ২ হাজার ৩০০ জন নারী। বাংলাদেশ নারীরা বিশ্বের শান্তি রক্ষায় বড় ধরনের ভূমিকা পালন করছেন।
তবে, পিস কিপিং মিশনের মাধ্যমে শান্তি রক্ষায় যথেষ্ট নয়। নারী, শান্তি ও নিরাপত্তায় যে জাতীয়
কর্মপরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে এতে আন্তর্জাতিক, জাতীয়, স্থানীয় ও ব্যক্তি পর্যায়ে ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। তাই নারী, শান্তি ও নিরাপত্তায় এজেন্ডায় সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশনের ভূমিকা অপরিসীম।
রিব-এর নির্বাহী পরিচালক ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা বলেন, নারী, শান্তি ও নিরাপত্তায় যে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে এটি প্রণয়নের শুরু থেকে জড়িত ছিলাম। 

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন