বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের ওপর বৈষম্য সংবিধান লঙ্ঘন

 যুগান্তর প্রতিবেদন 
১২ আগস্ট ২০২২, ০৮:৪৩ পিএম  |  অনলাইন সংস্করণ

রাজধানীর ওয়াইডব্লিউসিএ-মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে সিমাভির সহযোগিতায় বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস), বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক এবং জনউদ্যোগ-এর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষ্যে ‘নিজ এলাকায় কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে আদিবাসী নারী ও মেয়েদের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপিএস-এর নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীরের সভানেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাসের আহ্বায়ক, সংসদ সদস্য ফজলে হাসান বাদশা এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং ও জনউদ্যোগ জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ড. মোশতাক হোসেন।

আলোচনা সভার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক-এর কর্মকর্তা ফাল্গুনী ত্রিপুরা। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন বিএনপিএসের প্রকল্প ব্যবস্থাপক সঞ্জয় মজুমদার ও উš§ুক্ত আলোচনা পর্বটি সঞ্চালনা করেন উপ পরিচালক শাহনাজ সুমি। আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন জনউদ্যোগ জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ড. মোশতাক হোসেন, আইইডির নির্বাহী পরিচালক নুমান আহমেদ খান, খাগড়াপুর মহিলা কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক শেফালিকা ত্রিপুরা, জনউদ্যোগ-এর সমন্বয়কারী তারিক মিঠুল, সিমাভির লবি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি অফিসার ওমর ফারুক আকন্দ, বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সদস্য সচিব চঞ্চনা চাকমা প্রমুখ।

সংসদ সদস্য ফজলে হাসান বাদশা এমপি বলেন, আদিবাসীরা উপেক্ষিত। সমতলের আদিবাসীদের দুরাবস্থা চরমে পৌঁছেছে। সংবিধানে বলা হয়েছে, ধর্ম-বর্ণ-নারী-পুরুষসহ কোনো বিষয়ে বৈষম্য করা যাবে না। অথচ শব্দ নিয়ে বৈষম্য তৈরি করা হয়েছে। স্বাস্থ্যসম্মত কৈশোরবান্ধব আদিবাসী নারী ও মেয়েদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব কিন্তু রাষ্ট্র তা করে না।

আদিবাসী দিবস উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার আলোচনা থেকে পাওয়া সব ধরনের সুপারিশ বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখার আশ্বাস দেন তিনি।

সভা প্রধানের বক্তব্যে রোকেয়া কবীর বলেন, এই দেশে নারীদের নামাজের স্থানের জন্য আন্দোলন হয়। বাস ও রেলস্টেশন, মার্কেটে নারীদের জন্য টয়লেট ব্যবস্থার জন্য আন্দোলন হয় না। নারী নিপীড়ন মুক্ত পরিবেশের জন্য আন্দোলন হয় না বা এ অধিকার নিশ্চিত করার কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করি না। কিন্তু এই অধিকার নিশ্চিত করা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের দায়িত্ব। শুধু নির্বাচনের সময় গণতান্ত্রিকতার বিষয়টি সামনে আসে। নির্বাচন ও গণতন্ত্র দুটোকেই মিলিয়ে ফেলেছে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও আদিবাসী বিতর্ক তৈরি করেছে এই দেশের একটি স্বার্থান্বেষী মহল এবং তারাই রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাবিত করেছে।

আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, আদিবাসী নারীরা অনেক বৈষম্যের শিকার। শাসকশ্রেণি চায় না, আমরা ‘আদিবাসী’ শব্দটা বলি। সরকার তথ্য দিয়েছে, মাতৃমৃত্যু হার কমেছে, শিশু মৃত্যুহার কমেছে। কিন্তু আদিবাসীদের মধ্যে কত শতাংশ নারী মৃত্যুহার কমেছে, শিশু মৃত্যুহার কমেছে-সেই তথ্য নেই। কারণ তাদের গণনার মধ্যে ধরা হয়নি। উন্নয়নের মধ্যে ধরা হয়নি। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আদিবাসীদের সম্মান করে। অথচ শাসকরা আদিবাসীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন