সংকটে প্রকাশনা শিল্প
উপকরণের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে
সম্পাদকীয়
২৩ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
কাগজ, কালি, প্লেটসহ প্রকাশনা শিল্পসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উপকরণের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির কারণে এ শিল্প বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।
আমাদের দেশে বইয়ের বাজার ছোট। সামনে অমর একুশে বইমেলা। এখন প্রকাশকদের পুস্তক মুদ্রণে ব্যস্ত সময় পার করার কথা।
অথচ এখন প্রকাশনা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সবাই হতাশায় নিমজ্জিত, যা আগে কখনো ঘটেনি। সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সৃজনশীল প্রকাশ ঐক্য আয়োজিত ‘কাগজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও সংকট’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন প্রকাশকরা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কাগজের অস্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যবৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে দেশের পুরো প্রকাশনা খাত বড় ধরনের বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে।
এছাড়া প্রকাশনাসংশ্লিষ্ট অন্যান্য উপকরণের বাজারও অস্থির। প্রকাশকদের দাবি, মানুষের বই কেনার প্রবণতা বাড়েনি, বর্তমান বাজারমূল্যে ছাপাকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে।
বেশ কিছুদিন ধরেই সব ধরনের কাগজের বাজারে অস্থিরতা লক্ষ করা যাচ্ছে। এতে প্রকাশনা শিল্পের সঙ্গে জড়িত সবাই ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কাগজের দাম বৃদ্ধির কারণে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও চিন্তিত। কাগজের বাজারের অস্থিরতা দূর করার পদক্ষেপ নেওয়া না হলে কেবল যে প্রকাশনা খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তাই নয়; শিক্ষাব্যয় বৃদ্ধির কারণে বহু শিক্ষার্র্থী ঝরে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কাগজের বাজারের অস্থিরতার কারণ সরবরাহের সংকট।
এদিকে কাগজ উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দাবি, জ্বালানি সংকটের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সম্প্রতি বেড়েছে পরিবহণ খরচ, বেড়েছে শ্রমিকদের মজুরিও।
কাগজের বাজারের অস্থিরতার পেছনে এসব বিষয়েরও প্রভাব রয়েছে। এসব সংকটের অজুহাতে কেউ যাতে কাগজসহ প্রকাশনা শিল্পের অন্যান্য উপকরণের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে, সেদিকে কর্তৃপক্ষের উচিত যথাযথ দৃষ্টি দেওয়া।
গত কয়েক দশকে দেশের প্রকাশনা শিল্প যে গতিতে সম্প্রসারিত হয়েছে, তা আশাব্যঞ্জক। তবে বইয়ের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি মানসম্মত বই প্রকাশে উদ্যোগী না হলে এ শিল্পের সম্প্রসারণ অর্থহীন। মানসম্পন্ন বই প্রকাশ করা সম্ভব হলে সেসব বই বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রাও উপার্জন করা সম্ভব।
মননচর্চায় বইয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। গুণিজনদের মতে, কোনো জাতির সামগ্রিক উন্নতির পরিচয় কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়নে নয়; এর প্রতিফলন ঘটে মননচর্চার মধ্য দিয়েও।
জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার উন্নয়নে প্রকাশনা শিল্পের বিকাশ অব্যাহত রাখতে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। প্রকাশকদের মনে রাখতে হবে, মানহীন বই প্রকাশ অব্যাহত থাকলে তা প্রকাশনা শিল্পের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সংকটে প্রকাশনা শিল্প
উপকরণের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে
কাগজ, কালি, প্লেটসহ প্রকাশনা শিল্পসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উপকরণের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির কারণে এ শিল্প বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।
আমাদের দেশে বইয়ের বাজার ছোট। সামনে অমর একুশে বইমেলা। এখন প্রকাশকদের পুস্তক মুদ্রণে ব্যস্ত সময় পার করার কথা।
অথচ এখন প্রকাশনা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সবাই হতাশায় নিমজ্জিত, যা আগে কখনো ঘটেনি। সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সৃজনশীল প্রকাশ ঐক্য আয়োজিত ‘কাগজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও সংকট’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন প্রকাশকরা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কাগজের অস্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যবৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে দেশের পুরো প্রকাশনা খাত বড় ধরনের বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে।
এছাড়া প্রকাশনাসংশ্লিষ্ট অন্যান্য উপকরণের বাজারও অস্থির। প্রকাশকদের দাবি, মানুষের বই কেনার প্রবণতা বাড়েনি, বর্তমান বাজারমূল্যে ছাপাকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে।
বেশ কিছুদিন ধরেই সব ধরনের কাগজের বাজারে অস্থিরতা লক্ষ করা যাচ্ছে। এতে প্রকাশনা শিল্পের সঙ্গে জড়িত সবাই ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কাগজের দাম বৃদ্ধির কারণে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও চিন্তিত। কাগজের বাজারের অস্থিরতা দূর করার পদক্ষেপ নেওয়া না হলে কেবল যে প্রকাশনা খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তাই নয়; শিক্ষাব্যয় বৃদ্ধির কারণে বহু শিক্ষার্র্থী ঝরে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কাগজের বাজারের অস্থিরতার কারণ সরবরাহের সংকট।
এদিকে কাগজ উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দাবি, জ্বালানি সংকটের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সম্প্রতি বেড়েছে পরিবহণ খরচ, বেড়েছে শ্রমিকদের মজুরিও।
কাগজের বাজারের অস্থিরতার পেছনে এসব বিষয়েরও প্রভাব রয়েছে। এসব সংকটের অজুহাতে কেউ যাতে কাগজসহ প্রকাশনা শিল্পের অন্যান্য উপকরণের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে, সেদিকে কর্তৃপক্ষের উচিত যথাযথ দৃষ্টি দেওয়া।
গত কয়েক দশকে দেশের প্রকাশনা শিল্প যে গতিতে সম্প্রসারিত হয়েছে, তা আশাব্যঞ্জক। তবে বইয়ের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি মানসম্মত বই প্রকাশে উদ্যোগী না হলে এ শিল্পের সম্প্রসারণ অর্থহীন। মানসম্পন্ন বই প্রকাশ করা সম্ভব হলে সেসব বই বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রাও উপার্জন করা সম্ভব।
মননচর্চায় বইয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। গুণিজনদের মতে, কোনো জাতির সামগ্রিক উন্নতির পরিচয় কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়নে নয়; এর প্রতিফলন ঘটে মননচর্চার মধ্য দিয়েও।
জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার উন্নয়নে প্রকাশনা শিল্পের বিকাশ অব্যাহত রাখতে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। প্রকাশকদের মনে রাখতে হবে, মানহীন বই প্রকাশ অব্যাহত থাকলে তা প্রকাশনা শিল্পের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করবে।