শেয়ার দর কারসাজি, এবার হিরুকে দেড় কোটি টাকা জরিমানা

 যুগান্তর প্রতিবেদন 
১৬ অক্টোবর ২০২২, ১০:৩৯ পিএম  |  অনলাইন সংস্করণ

আরও একটি কোম্পানির শেয়ারের দর কারসাজি করে বাড়ানোর অভিযোগের প্রমাণ পেয়ে আলোচিত বিনিয়োগকারী আবুল খায়ের হিরুকে জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি)।

আর্থিক খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি আইপিডিসির শেয়ার নিয়ে কারসাজির দায়ে এবার হিরুকে দেড় কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এর আগেও সাতটি কোম্পানির শেয়ারে কারসাজি করে ১৩৭ কোটি টাকা মুনাফা করে ১০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা জরিমানা দিয়েছিলেন এই হিরু।

ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের ব্যবসায়িক পার্টনার হিরু সমবায় অধিদপ্তরের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা।গত কয়েক বছরে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে শত কোটি টাকার বেশি কামিয়েছেন বলে বিএসইসির তদন্তে ধরা পড়েছে।

তবে আগের জরিমানার বিষয়গুলো স্বীকার করলেও হিরু গণমাধ্যমকে বলেন, দেড় কোটি টাকা জরিমানার বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। তার কাছে কোনো চিঠি যায়নি।

পুঁজিবাজারে বীমা খাতের শেয়ারমূল্যের অস্বাভাবিক উত্থান নিয়ে ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর যুগান্তরে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।অনুসন্ধানে জানা যায়, পুঁজিবাজারে বীমা খাতের শেয়ারমূল্যের অস্বাভাবিক উত্থানের পেছনেও এই হিরু, যা জুয়াকেও হার মানায়। চার মাসে প্রায় ৮ গুণ বাড়ানো হয় কোনো কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম। করোনার মধ্যে যেখানে মানুষের বীমা করা কমেছিল, সেখানে কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে দ্রুতগতিতে এ খাতের শেয়ারের দাম বাড়ানো হয়।এক্ষেত্রে সংঘবদ্ধভাবে কয়েকটি গ্রুপ মিলে শেয়ার কিনে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ওইসব শেয়ারের দাম বাড়িয়েছে। এরপর বেশি দামে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করে কেটে পড়তে শুরু করে চক্রটি। শুধু বীমা খাত দিয়েই শেয়ারবাজারকে গোরস্তানে পাঠানোর আয়োজন চালায় এই চক্র।

সরকারি প্রতিষ্ঠান সমবায় অধিদপ্তরকেন্দ্রিক একটি চক্র, কোম্পানির উদ্যোক্তা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং কয়েকটি মার্চেন্ট ও ব্রোকারেজ হাউজ এর সঙ্গে জড়িত। এর নেতৃত্বে রয়েছেন আবুল খায়ের হিরু নামে সমবায় অধিদপ্তরের এক ডেপুটি রেজিস্ট্রার। বাজারে এই নামটি এখন সবার মুখে মুখে। তবে বড় লেনদেন তিনি নিজের নামে করেননি।নিজের স্ত্রী, সমবায়ের নামে ভুয়া কোম্পানি খুলে এবং অন্য লোকজনের নামে ব্যবসা করেছেন। বীমাকেন্দ্রিক কয়েকশ কোটি টাকার পোর্টফোলিও ম্যানেজ করছেন এই কর্মকর্তা। তার টাকার উৎস নিয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরাই বিস্মিত।

হিরুর বিষয়ে ওই সময় সংশ্লিষ্টরা বলেছিলেন, ভুয়া করোনা পরীক্ষার মতো শেয়ারবাজারে এক শাহেদের উত্থান হয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিভিন্ন কর্মকর্তা, সরকারি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা এবং তারকা খেলোয়াড়দের সঙ্গেও ছবি তুলে ফেসবুকে প্রচার করছেন তিনি। আবার ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ারবাজার নিয়ে টকশো উপস্থাপনা করছেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে আলোচনায় এসেছেন হিরু।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন