এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার পেলেন দুই লেখক
সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ পুরস্কার পেয়েছেন প্রবীণ কথাশিল্পী হাসনাত আবদুল হাই। একই সঙ্গে তরুণ সাহিত্যশ্রেণিতে এ পুরস্কার পেয়েছেন গল্পকার নাহিদা নাহিদ।
বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে বিজয়ীদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। ক্রেস্ট, সনদপত্রের পাশাপাশি হাসনাত আবদুল হাই ও নাহিদা যথাক্রমে পাঁচ লাখ ও এক লাখ টাকা পেয়েছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাংসদ আসাদুজ্জামান নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অন্যদিন সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম।
ভিডিও বার্তার মাধ্যমে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন বিচারকমণ্ডলীর প্রধান অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। বিচারকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন সদ্যপ্রয়াত কালি ও কলম সম্পাদক আবুল হাসনাত, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিশ্বজিৎ ঘোষ এবং কথাশিল্পী হরিশংকর জলদাস।
পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি ব্যক্ত করে হাসনাত আবদুল হাই বলেন, আমি প্রায় ১৫০টি বই লিখেছি। এগুলোর মধ্যে বড়মাপের কোনো বই নেই। কারণ এত বইয়ের মধ্যে পাঠক শুধু তিন-চারটি বইয়ের প্রশংসা করেন। যাতে আমি তৃপ্ত না। আমি সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় লিখেছি। বলতে গেলে অনধিকার চর্চা করেছি। যদি আমি বিশেষ কোনো শাখায় ধারাবাহিকভাবে লিখতাম তাহলে হয়তো ভালো লিখতে পারতাম।
তিনি বলেন, সম্প্রতি আমি উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের ‘হ্যামলেট’ ও ‘ম্যাকবেথ’ এ দুই নাটককে এক করে ‘হ্যাম-বেথ’ নামে একটি নাটক লিখেছি। আমার আগে আর কেউ দুইটি নাটককে এক করে লেখেনি। আমি বলতে চাই, এটাই আমার জীবনের সেরা লেখা।
নাহিদা নাহিদ বলেন, আমি উচ্ছ্বসিত ও আপ্লুত। এ মঞ্চে দাঁড়াতে পেরে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। এ পুরস্কার আমাকে সাহস জোগাবে। মুকুট যেহেতু পরেছি, সেটা ধরে রাখার চেষ্টা করব।
আসাদুজ্জামান নূর বলেন, হুমায়ূনকে আমরা শুধুই একভাবে দেখার চেষ্টা করি। তিনি ‘বাকের ভাই’ লিখেছেন, জনপ্রিয় নাটক লিখেছেন। কিন্তু এখানেই শেষ কথা না। তাকে নিয়ে সত্যিকার অর্থে বিচার বিশ্লেষণ এখনও হয়নি। তাকে জনপ্রিয় লেখক বলা হয়। হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয়তার পেছনে অনেক কারণ আছে। সেগুলো বিশ্লেষণ করা উচিত। তার মূল্যায়ন যথাযথভাবে এখনও হয়নি। যদিও আমাদের দেশে সবকিছু অনেক দেরিতে হয়।
কেএম খালিদ বলেন, হুমায়ূন আহমেদের বইয়ের সবচেয়ে বড় দিক হল- তার শেষ না করে উঠা যায় না। মানুষ যত খারাপই হোক না কেন, প্রতিটি মানুষের মধ্যে কিছু ভালো দিক আছে, সেটা হুমায়ূন আহমেদ তার বইয়ের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।
মেহের আফরোজ শাওন বলেন, যারা এ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তাদের হুমায়ূন আহমেদ পরিবারের পক্ষ থেকে স্বাগত জানাই। এ পুরস্কার যারা সাহিত্যাঙ্গনে রয়েছেন তাদের অনুপ্রাণিত করবে।
২০১৫ সালে এ পুরস্কার প্রবর্তিত হয়। প্রথম বছর দুই শাখায় এ পুরস্কার পেয়েছিলেন শওকত আলী ও সাদিয়া মাহ্জাবীন ইমাম। ২০১৬ সালে পুরস্কৃত হয়েছিলেন হাসান আজিজুল হক ও স্বকৃত নোমান। ২০১৭ সালে এ পুরস্কার তুলে দেয়া হয়েছিল জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত ও মোজাফ্ফর হোসেনের হাতে। ২০১৮ সালে পুরস্কৃত হয়েছিলেন রিজিয়া রহমান ও ফাতিমা রুমি। ২০১৯ সালে পুরস্কার দেয়া হয়েছিল রাবেয়া খাতুন ও সাদাত হোসাইনকে।
এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার পেলেন দুই লেখক
সাংস্কৃতিক রিপোর্টার
১২ নভেম্বর ২০২০, ২২:০০:৫২ | অনলাইন সংস্করণ
সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ পুরস্কার পেয়েছেন প্রবীণ কথাশিল্পী হাসনাত আবদুল হাই। একই সঙ্গে তরুণ সাহিত্যশ্রেণিতে এ পুরস্কার পেয়েছেন গল্পকার নাহিদা নাহিদ।
বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে বিজয়ীদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। ক্রেস্ট, সনদপত্রের পাশাপাশি হাসনাত আবদুল হাই ও নাহিদা যথাক্রমে পাঁচ লাখ ও এক লাখ টাকা পেয়েছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাংসদ আসাদুজ্জামান নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অন্যদিন সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম।
ভিডিও বার্তার মাধ্যমে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন বিচারকমণ্ডলীর প্রধান অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। বিচারকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন সদ্যপ্রয়াত কালি ও কলম সম্পাদক আবুল হাসনাত, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিশ্বজিৎ ঘোষ এবং কথাশিল্পী হরিশংকর জলদাস।
পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি ব্যক্ত করে হাসনাত আবদুল হাই বলেন, আমি প্রায় ১৫০টি বই লিখেছি। এগুলোর মধ্যে বড়মাপের কোনো বই নেই। কারণ এত বইয়ের মধ্যে পাঠক শুধু তিন-চারটি বইয়ের প্রশংসা করেন। যাতে আমি তৃপ্ত না। আমি সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় লিখেছি। বলতে গেলে অনধিকার চর্চা করেছি। যদি আমি বিশেষ কোনো শাখায় ধারাবাহিকভাবে লিখতাম তাহলে হয়তো ভালো লিখতে পারতাম।
তিনি বলেন, সম্প্রতি আমি উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের ‘হ্যামলেট’ ও ‘ম্যাকবেথ’ এ দুই নাটককে এক করে ‘হ্যাম-বেথ’ নামে একটি নাটক লিখেছি। আমার আগে আর কেউ দুইটি নাটককে এক করে লেখেনি। আমি বলতে চাই, এটাই আমার জীবনের সেরা লেখা।
নাহিদা নাহিদ বলেন, আমি উচ্ছ্বসিত ও আপ্লুত। এ মঞ্চে দাঁড়াতে পেরে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। এ পুরস্কার আমাকে সাহস জোগাবে। মুকুট যেহেতু পরেছি, সেটা ধরে রাখার চেষ্টা করব।
আসাদুজ্জামান নূর বলেন, হুমায়ূনকে আমরা শুধুই একভাবে দেখার চেষ্টা করি। তিনি ‘বাকের ভাই’ লিখেছেন, জনপ্রিয় নাটক লিখেছেন। কিন্তু এখানেই শেষ কথা না। তাকে নিয়ে সত্যিকার অর্থে বিচার বিশ্লেষণ এখনও হয়নি। তাকে জনপ্রিয় লেখক বলা হয়। হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয়তার পেছনে অনেক কারণ আছে। সেগুলো বিশ্লেষণ করা উচিত। তার মূল্যায়ন যথাযথভাবে এখনও হয়নি। যদিও আমাদের দেশে সবকিছু অনেক দেরিতে হয়।
কেএম খালিদ বলেন, হুমায়ূন আহমেদের বইয়ের সবচেয়ে বড় দিক হল- তার শেষ না করে উঠা যায় না। মানুষ যত খারাপই হোক না কেন, প্রতিটি মানুষের মধ্যে কিছু ভালো দিক আছে, সেটা হুমায়ূন আহমেদ তার বইয়ের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।
মেহের আফরোজ শাওন বলেন, যারা এ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তাদের হুমায়ূন আহমেদ পরিবারের পক্ষ থেকে স্বাগত জানাই। এ পুরস্কার যারা সাহিত্যাঙ্গনে রয়েছেন তাদের অনুপ্রাণিত করবে।
২০১৫ সালে এ পুরস্কার প্রবর্তিত হয়। প্রথম বছর দুই শাখায় এ পুরস্কার পেয়েছিলেন শওকত আলী ও সাদিয়া মাহ্জাবীন ইমাম। ২০১৬ সালে পুরস্কৃত হয়েছিলেন হাসান আজিজুল হক ও স্বকৃত নোমান। ২০১৭ সালে এ পুরস্কার তুলে দেয়া হয়েছিল জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত ও মোজাফ্ফর হোসেনের হাতে। ২০১৮ সালে পুরস্কৃত হয়েছিলেন রিজিয়া রহমান ও ফাতিমা রুমি। ২০১৯ সালে পুরস্কার দেয়া হয়েছিল রাবেয়া খাতুন ও সাদাত হোসাইনকে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2024